রাজবাড়ী ভয়েস ডট কম : রাজবাড়ী জেলার কালুখালী উপজেলার মদাপুর ইউনিয়নে অবস্থিত প্রাচীন রাজরাজেশ্বর গাছের মন্দির ভক্ত ও দর্শনার্থীদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। স্থানীয়দের মতে প্রায় সাড়ে সাতশো বছরের পুরনো এই মন্দিরে প্রতিদিনই দূর-দূরান্ত থেকে ভক্তরা পূজা ও মানত করতে আসেন।
মন্দির প্রাঙ্গণে রয়েছে দুটি বিশাল বটগাছসহ নানান প্রজাতির গাছপালা। স্থানীয়দের বিশ্বাস, বহু আগে বর্ষার বানে ভেসে এসেছিল এই বটগাছ। বর্তমানে এগুলো দর্শনার্থীদের কাছে অন্যতম আকর্ষণ। বিশেষ করে শনিবার ও মঙ্গলবার পূজা উপলক্ষে মন্দির চত্বর ভক্তদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে। এ মন্দিরেই বেশি হয় শিশুর মুখেভাত অনুষ্ঠান। প্রতিবছর চৈত্র মাসে অনুষ্ঠিত হয় ঐতিহ্যবাহী বারুণীর মেলা ও বারুণী স্নান। একসময় ঘোড়াদৌড় প্রতিযোগিতা ছিল মেলার বড় আকর্ষণ।
মন্দির কমিটির সভাপতি নরেশ প্রামানিক জানান, “রাজরাজেশ্বর মন্দির শুধু একটি ধর্মীয় স্থান নয়, এটি আমাদের এলাকার ঐতিহ্য ও ইতিহাসের ধারক। প্রতিদিন শত শত ভক্ত এখানে আসেন। মন্দিরকে ঘিরে এলাকায় ধর্মীয় সম্প্রীতির পরিবেশ গড়ে উঠেছে।”
মন্দিরের পুরোহিত সুকুমার চক্রবর্তী বলেন, “আমাদের পূর্ব পুরুষরা এখানে পূজা করতেন। আমি আমাদের বংশের ১৪তম পুরুষ হিসেবে প্রায় ৩০-৩৫ বছর ধরে পূজা করে আসছি। এই মন্দিরে ৭২২ বছর ধরে পূজা চলছে। প্রতিদিন সকাল-বিকেলে নিয়মিত আরাধনা হয়। শনিবার ও মঙ্গলবার বিশেষ ভক্তদের ঢল নামে। এখানে মুখেভাত অনুষ্ঠান করতে অনেকেই আসেন।”
মানত দিতে আসা ভক্ত লুইপা দাস জানান, “ছেলের মুখে প্রসাদ দেওয়ার জন্য এখানে এসেছি। শুনেছি, এই মন্দিরে মানত করলে অনেকের মনোবাসনা পূর্ণ হয়। আমরাও সেই বিশ্বাস নিয়ে এসেছি।”
স্থানীয়রা জানান, রাজরাজেশ্বর মন্দির তাদের গর্ব। শুধু সনাতন ধর্মাবলম্বীই নয়, অন্যান্য ধর্মাবলম্বীরাও এখানে আসেন। প্রাচীন মন্দির আর বিশাল বটগাছ মিলিয়ে জায়গাটি এক ভিন্নধর্মী পরিবেশ তৈরি করেছে।







