রাজবাড়ী ভয়েস ডট কম : রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলায় নুরুল হক ওরফে নুরাল পাগলার দরবারে হামলা নিয়ন্ত্রণের সময় পুলিশের ওপর হামলা ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ নিয়ে গ্রেপ্তারের সংখ্যা দাঁড়ালো ১৪ জনে। সোমবার বিকেলে বিশেষ অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।
রাজবাড়ীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) মোঃ শরীফ আল রাজীব বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, “পুলিশের ওপর হামলা ও গাড়ি ভাঙচুরের মামলায় নতুন করে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ১৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ভিডিও ফুটেজ দেখে অভিযান এখনো অব্যাহত রয়েছে।”
গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে রয়েছেন—
উজানচর ইউনিয়নের বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের মোঃ লাল মিয়া মৃধার ছেলে ও উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক হিরু মৃধা, দক্ষিণ উজানচরের দিরাজতুল্লা মৃধাপাড়ার মাসুদ মৃধা (সহ-সভাপতি, ছাত্রলীগ), দেওয়ানপাড়ার শাফিন সরদার, এনামুল হক জনি, কাজী অপু, মোঃ হায়াত আলী মৃধা, মোঃ জীবন সরদার, বিল্লু, সাইফুল ইসলাম শুভ, মোহাম্মদ ফেরদৌস সরদারসহ আরও কয়েকজন। সর্বশেষ সোমবার বিকেলে গ্রেপ্তার করা হয় আলমগীর গাজী, সোহান সরদার ও রিয়াজ হোসেন রিতান্তকে। এর মধ্যে কাজী অপু ও বিল্লু আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
এর আগে শুক্রবার রাতে গোয়ালন্দ ঘাট থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সেলিম মোল্লা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা সাড়ে তিন হাজার জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। এরপর থেকে টানা তিনদিনের অভিযানে স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগের দুই নেতাসহ মোট ১৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার জুমার নামাজের পর ‘তৌহিদি জনতা’র ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল বের করে স্থানীয় মুসল্লিরা। বিক্ষোভ থেকে নুরাল পাগলার দরবার শরীফে হামলা চালানো হয়। পাল্টা প্রতিরোধে নামে নুরাল পাগলার অনুসারীরা। সংঘর্ষে একজন নিহত ও শতাধিক মানুষ আহত হন। এরপর বিক্ষুব্ধ জনতা দরবার শরীফে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং কবর থেকে মরদেহ উত্তোলন করে তা পুড়িয়ে ফেলে। এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গেলে পুলিশের ওপর হামলা ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটে।
প্রসঙ্গত, গত ২৩ আগস্ট নুরুল হক ওরফে নুরাল পাগলার মৃত্যু হলে তার ভক্তরা দরবারের ভেতর ১০-১২ ফুট উঁচু স্থাপনা নির্মাণ করে তাকে দাফন করেন, যা দেখতে অনেকটা মক্কার কাবা শরীফের মতো ছিল। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় মুসল্লিদের আপত্তি দেখা দেয় এবং দীর্ঘদিন উত্তেজনা চলতে থাকে। অবশেষে শুক্রবারের ঘটনায় বড় ধরনের সংঘর্ষে রূপ নেয় পরিস্থিতি।