রাজবাড়ী ভয়েস ডট কম : রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ আবু বকর সিদ্দিকের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দায়িত্বহীনতা ও একই কর্মস্থলে দীর্ঘদিন অবস্থান করার অভিযোগ উঠেছে। তথ্য অধিকার আইনে আবেদন করেও তার কাছ থেকে সঠিক তথ্য পাওয়া যায়নি বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় সাংবাদিকরা।
জানা যায়, ২০২০ সালের ২৯ ডিসেম্বর কালুখালীতে যোগ দেন মোঃ আবু বকর সিদ্দিক। যোগদানের পর থেকেই দেশীয় মৎস্য সম্পদ রক্ষা, অবৈধ জাল বিনষ্ট না করা, নিয়মিত বাজার তদারকি না করা, জাটকা ও মা ইলিশ সংরক্ষণ কর্মসূচী এবং জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ পালনে নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠে।
গত ১ জুলাই স্থানীয় এক সাংবাদিক ২০২৩ ও ২০২৪ সালের মা ইলিশ রক্ষা, জাটকা সংরক্ষণ কর্মসূচী এবং জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ পালনের বাজেট ও বিস্তারিত ব্যয়ের হিসাব চেয়ে তথ্য অধিকার আইনে আবেদন করেন। কিন্তু দীর্ঘদিন গড়িমসি করে প্রায় এক মাস পর গত ৭ আগস্ট তিনি তথ্য সরবরাহ করেন।
প্রদত্ত তথ্যে দেখা যায়—
জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উদযাপন: ২০২৩ সালে ৬০ হাজার টাকা, ২০২৪ সালে ৬৫ হাজার টাকা খরচ দেখানো হয়েছে।
জাটকা সংরক্ষণ কর্মসূচী: ২০২৩ ও ২০২৪ সালে প্রতিবার ৭৫ হাজার টাকা করে খরচ দেখানো হয়েছে।
মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান: ২০২৩ সালে ৫০ হাজার টাকা, ২০২৪ সালে ৪০ হাজার টাকা খরচ দেখানো হয়েছে।
তবে এসব অর্থ কোন খাতে কত ব্যয় হয়েছে তার কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য তিনি দিতে পারেননি।
এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ আবু বকর সিদ্দিক বলেন, “আমি যা বরাদ্দ পেয়েছি তার সব খরচ করেছি। কোন খাতে কত টাকা খরচ করেছি তা আপনি দেখতে পারবেন না। আমাদের অডিটে সবকিছু দেখা হবে।”
অন্যদিকে কালুখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মহুয়া আফরোজ বলেন, “তথ্য জানার অধিকার দেশের সকল নাগরিকের রয়েছে। মৎস্য কর্মকর্তা এভাবে তথ্য withheld করতে পারেন না। তিনি অবশ্যই বিস্তারিত তথ্য দিবেন। কেন তিনি দেননি তা আমার কাছে বোধগম্য নয়।”
স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, সরকারি বিধি অনুযায়ী একজন কর্মকর্তা একই কর্মস্থলে সর্বোচ্চ তিন বছর থাকতে পারেন। কিন্তু উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করে আবু বকর সিদ্দিক নিয়ম ভেঙে টানা পাঁচ বছর ধরে একই কর্মস্থলে রয়েছেন। তারা বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান।