৪ঠা আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | শুক্রবার

রাজবাড়ীতে নুরাল পাগলার মরদেহ পোড়ানো ও রাসেল হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার ২ আসামীর স্বীকারোক্তি

রাজবাড়ী ভয়েস ডট কম : রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলায় নুরুল হক ওরফে নুরাল পাগলার দরবারে হামলা, ভাংচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ ও ভক্ত রাসেল মোল্যা হত্যা মামলার দুই আসামী আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলো—গোয়ালন্দ উপজেলার অম্বলপুর গ্রামের আব্দুল জলিল শেখের ছেলে ও গোয়ালন্দ বড় মসজিদের ইমাম মাওলানা মোঃ আবু সাঈদ (৪৫) এবং দেওয়ানপাড়া গ্রামের কুদ্দুস শেখের ছেলে মোঃ রাসেল শেখ (২৪)। বৃহস্পতিবার ফরিদপুর ও ঢাকার নাখালপাড়া থেকে পৃথক অভিযান চালিয়ে গোয়ালন্দ ঘাট থানা পুলিশ ও জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) তাদের গ্রেপ্তার করে। পরে বিকেলে রাজবাড়ী আদালতে হাজির করা হলে তারা ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি প্রদান করে। আদালতের আদেশে তাদেরকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

এ ঘটনায় এ পর্যন্ত ২৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এর মধ্যে হত্যা মামলার আসামী ৮ জন এবং পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় ১৬ জন রয়েছে। ইতোমধ্যে ৭ জন আসামী আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।

নিহত রাসেল মোল্লার বাবা আমজাদ মোল্লা গত সোমবার রাতে গোয়ালন্দ থানায় হত্যা, অগ্নিসংযোগ, লাশ পোড়ানো, ক্ষতিসাধন, চুরি ও জখমের অভিযোগে অজ্ঞাতনামা ৩৫০০-৪০০০ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন। এর আগে গত শুক্রবার রাতে গোয়ালন্দ ঘাট থানার এসআই সেলিম মোল্লা বাদী হয়ে পুলিশের ওপর হামলা ও গাড়ি ভাংচুরের ঘটনায় অজ্ঞাতনামা সাড়ে তিন হাজার জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন।

রাজবাড়ীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মোঃ শরীফ আল রাজীব জানান, পুলিশের ওপর হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় ১৬ জন এবং রাসেল হত্যা মামলায় ৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে অপু, বিল্লু, সোহান সরদার, অভি মন্ডল রঞ্জু, মাওলানা আব্দুল লতিফ, মাওলানা আবু সাঈদ ও মোঃ রাসেল শেখ স্বীকারোক্তি দিয়েছে।

উল্লেখ্য, গত শুক্রবার জুমার নামাজের পর তৌহিদি জনতা ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল থেকে নুরাল পাগলার দরবারে হামলা চালানো হয়। পাল্টা আক্রমণ করে নুরাল পাগলার ভক্তরা। সংঘর্ষে ভক্ত রাসেল মোল্যা নিহত হন এবং শতাধিক মানুষ আহত হন। পরে দরবারে অগ্নিসংযোগ, লুটপাট ও ভাঙচুর করা হয়। কবর ভেঙে মরদেহ উত্তোলন করে পুড়িয়ে ফেলা হয়। পুলিশের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের প্রচেষ্টা ব্যর্থ হলে তাদের ওপরও হামলা চালানো হয় এবং গাড়ি ভাঙচুর করা হয়।

স্থানীয়রা জানান, নুরাল পাগলা ২৩ আগস্ট মারা যান। ভক্তরা দরবারের ভেতরে তাকে কবর দিয়ে কাবা শরীফের আদলে স্থাপনা নির্মাণ করেন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় মুসল্লিদের মধ্যে ক্ষোভ ও উত্তেজনা তৈরি হয়, যা পরবর্তীতে ভয়াবহ সংঘর্ষ ও হত্যাকাণ্ডে রূপ নেয়।

Scroll to Top