রাজবাড়ী ভয়েস ডট কম : ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান ২০২৫ উপলক্ষে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলায় সচেতনতা কার্যক্রমে গড়িমসি ও দায়সারা মনোভাবের অভিযোগ উঠেছে। নির্ধারিত সময়ে প্রচার-প্রচারণা না চালানোয় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় জেলেরা।
সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী ৪ অক্টোবর থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত ২২ দিন ইলিশ আহরণ, পরিবহন, মজুদ ও বিক্রি নিষিদ্ধ থাকলেও, জেলেদের সচেতন করতে উপজেলায় হাট-বাজার, জেলেপাড়া ও নদীতে নৌর্যালি আয়োজনের কথা থাকলেও কার্যত কোনো দৃশ্যমান কার্যক্রম দেখা যায়নি।
এরই মধ্যে সোমবার (৬ অক্টোবর) দুপুরে দৌলতদিয়া ৭ নম্বর ফেরিঘাট এলাকায় ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের (২য় সংশোধিত) অর্থায়নে দায়সারা ধরনের একটি মতবিনিময় সভা আয়োজন করে উপজেলা টাস্কফোর্স কমিটি।
সরেজমিনে দেখা যায়, ফেরিঘাট এলাকায় একটি সামিয়ানা টানিয়ে অল্প কিছু চেয়ার বসিয়ে আয়োজন করা হয় সভার। স্বল্পসংখ্যক জেলে উপস্থিত থাকলেও অধিকাংশই ছিলেন অনুপস্থিত। একদিনের নোটিশে তড়িঘড়ি করে আয়োজন করায় জেলেরা এতে অংশ নিতে পারেননি।
দৌলতদিয়া ঘাট এলাকার জেলে আজিবর হোসেন বলেন, “প্রতি বছর প্রচুর প্রচারণা হতো, বড় বড় ব্যানার-সাইনবোর্ড টানানো হতো, নৌর্যালি ও বড় পরিসরে সভা হতো। এবছর কিছুই দেখা যাচ্ছে না।”
ছাত্তার মেম্বারপাড়ার জেলে সোহেল ব্যাপারী বলেন, “জেলেরা শিক্ষিত না, তাদের আগে থেকে জানানো দরকার ছিল। আজ শুধু নামকাওয়াস্তে সভা হলো, এমনকি নাস্তার ব্যবস্থাও ছিল না।”
স্থানীয় জেলে কবির হোসেন বলেন, “প্রতিবছর একাধিকবার বৈঠক হতো। এবছর শুধু একদিন বিকেলে মাইকিং হয়েছে। এতে মা ইলিশ সংরক্ষণ কার্যক্রমে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হবে।”
জেলে আনোয়ার হোসেনের মন্তব্য, “সরকারি বাজেট থাকা সত্ত্বেও মাঠপর্যায়ে সচেতনতা কার্যক্রম নেই বললেই চলে।”
গোয়ালন্দ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আনোয়ারুল ইসলাম পাইলট বলেন, “আমরা এবছর অনেক দেরিতে চিঠি পেয়েছি। তাছাড়া পূজার ছুটির কারণে সময়মতো সভা করা সম্ভব হয়নি। এখন জেলেদের অবহিত করার চেষ্টা করছি।”
সভা শেষে ৪ কেজি জব্দকৃত ইলিশ মাছ দুস্থদের মধ্যে বিতরণ করা হয়। এছাড়া ৫০ হাজার মিটার জাল জনসমক্ষে পুড়িয়ে ফেলা হয় এবং জব্দকৃত একটি ইঞ্জিনচালিত ট্রলার উন্মুক্ত নিলামে ৩৬ হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়।
গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নাহিদুর রহমান বলেন, “মা ইলিশ সংরক্ষণে সরকার কঠোর অবস্থানে রয়েছে। জেলেদের সচেতন করা এবং আইন প্রয়োগের মাধ্যমে ইলিশের প্রজনন সুরক্ষা নিশ্চিত করা হবে।”
এসময় উপস্থিত ছিলেন দৌলতদিয়া নৌপুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (ওসি) ত্রিনাথ সাহা, কোস্টগার্ড ও স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা।







