১৯শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | মঙ্গলবার

রাজবাড়ীর ৪ কলেজে শতভাগ ফেল: হতাশ শিক্ষার্থী-অভিভাবকরা

রাজবাড়ী ভয়েস ডট কম : রাজবাড়ী জেলায় এ বছর উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) পরীক্ষায় চারটি কলেজ থেকে অংশ নেওয়া কোনো শিক্ষার্থীই পাস করতে পারেনি। ফলে প্রতিষ্ঠানগুলোতে নেমে এসেছে চরম হতাশা, ক্ষোভ ও নিরাশার ছায়া।

শতভাগ ফেল করা কলেজগুলো হলো—রাজবাড়ী সদর উপজেলার বরাট ভাকলা স্কুল অ্যান্ড কলেজ, গোয়ালন্দ উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধা ফকির আব্দুল জব্বার কলেজ ও আব্দুল হালিম মিঞা কলেজ, এবং কালুখালী উপজেলার নূর নেছা কলেজ।

বরাট ভাকলা স্কুল অ্যান্ড কলেজের মানবিক বিভাগ থেকে ৮ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে সবাই ফেল করেছে।
বীর মুক্তিযোদ্ধা ফকির আব্দুল জব্বার কলেজের মানবিক বিভাগ থেকে ৭ জন এবং আব্দুল হালিম মিঞা কলেজের মানবিক বিভাগ থেকে ৫ জন পরীক্ষার্থীর কেউ পাস করতে পারেনি।
অন্যদিকে, কালুখালীর নূর নেছা কলেজের মানবিক বিভাগে ১১ জন, বিজ্ঞান বিভাগে ১ জন এবং ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে ৪ জনসহ মোট ১৬ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়ে সবাই অকৃতকার্য হয়েছে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে বরাট ভাকলা স্কুল অ্যান্ড কলেজে গিয়ে দেখা যায়, কলেজ শাখায় কোনো শিক্ষার্থী নেই। অফিসকক্ষ খোলা থাকলেও শ্রেণিকক্ষগুলো ফাঁকা।

কলেজটির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কাজী জাহিদুল ইসলাম ইকরাম বলেন,“আমাদের কলেজ শাখা চালু হয় ২০১৫ সালে, এবং ২০১৭ সালে প্রথমবার পরীক্ষায় অংশ নিয়ে চমৎকার ফলাফল করেছিল। তবে এমপিওভুক্ত না হওয়ায় শিক্ষকরা ধীরে ধীরে অন্যত্র চাকরি নেন। ফলে শিক্ষার্থী ভর্তি কমে যায় এবং ফলাফলও খারাপ হতে থাকে। এবারের পরীক্ষার্থীরা সবাই অনিয়মিত ছিল। এখন নতুনভাবে মানবিক শাখায় ৩১ জন ভর্তি হয়েছে—আগামী বছর ভালো ফলাফল আসবে বলে আশা করছি।”

গোয়ালন্দ উপজেলার আব্দুল হালিম মিঞা কলেজে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানটি তালাবদ্ধ। একতলা ভবনের পাশে টিনের ঘরে কলেজের সাইনবোর্ডে লেখা রয়েছে “প্রতিষ্ঠা ২০১৪”। এবছর ৫ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়ে সবাই ফেল করেছে। কলেজ কর্তৃপক্ষের কারও সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
একইভাবে, বীর মুক্তিযোদ্ধা ফকির আব্দুল জব্বার কলেজেও গিয়ে তালাবদ্ধ অবস্থা পাওয়া যায়।

কালুখালীর নূর নেছা কলেজের শতভাগ ফেল করার বিষয়ে জানতে অধ্যক্ষ মাহমুদুর রশিদ ইমন-এর সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও সাড়া পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে জানতে রাজবাড়ী জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) শংকর চন্দ্র বৈদ্য-র মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলেও তার সাড়া মেলেনি।

শিক্ষক ও অভিভাবকদের মতে, এমপিওভুক্ত না হওয়া, শিক্ষক সংকট, অনিয়মিত ক্লাস, শিক্ষার্থী অনুপস্থিতি এবং একাডেমিক তদারকির অভাব—এই কারণগুলোর সমন্বিত প্রভাবেই এমন হতাশাজনক ফলাফল এসেছে।

শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এসব প্রতিষ্ঠানের একাডেমিক দুরবস্থা চিহ্নিত করে দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে আগামী বছরও একই চিত্র দেখা যেতে পারে।

Scroll to Top