রাজবাড়ী ভয়েস ডট কম : রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলায় নুরুল হক ওরফে নুরাল পাগলার দরবারে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ এবং মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করে আগুন দিয়ে পোড়ানোর ঘটনায় জড়িত নজরুল ইসলাম নজির (৩৩) কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তিনি গোয়ালন্দ উপজেলার উজানচর ইউনিয়নের নাসের মাতুব্বরপাড়ার আকবর শেখের ছেলে।
রবিবার ভোরে ফরিদপুর জেলার নগরকান্দা এলাকা থেকে গোয়ালন্দ ঘাট থানা পুলিশ ও জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) যৌথ অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে। বিকেলে তাকে রাজবাড়ী আদালতে সোপর্দ করা হলে আদালতের নির্দেশে কারাগারে পাঠানো হয়।
রাজবাড়ীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) মো. শরীফ আল রাজীব বলেন, নিহত রাসেলের হত্যা মামলায় নজরুল ইসলাম নজিরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর আগে এ ঘটনায় এ পর্যন্ত দু’টি মামলায় মোট ২৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে অপু, বিল্লু, সোহান সরদার, অভি মণ্ডল রঞ্জু, মাওলানা আব্দুল লতিফ, মাওলানা আবু সাঈদ ও মো. রাসেল শেখ আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
এর আগে গত সোমবার রাতে নিহত রাসেলের বাবা আজাদ মোল্লা বাদী হয়ে হত্যা, অগ্নিসংযোগ, লাশ পোড়ানো, ক্ষতিসাধন, চুরি ও জখমের অভিযোগে অজ্ঞাতনামা ৩৫০০–৪০০০ জনকে আসামি করে গোয়ালন্দ থানায় মামলা দায়ের করেন। এছাড়া গত শুক্রবার রাতে গোয়ালন্দ ঘাট থানার এসআই সেলিম মোল্লা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা সাড়ে তিন হাজার জনকে আসামি করে আরেকটি মামলা করেন।
উল্লেখ্য, গত ২৩ আগস্ট মারা যান নুরুল হক ওরফে নুরাল পাগলা। পরে তার ভক্তরা দরবার শরীফের ভেতরে কবর দিয়ে উপরে ১০–১২ ফুট উঁচু একটি স্থাপনা নির্মাণ করেন, যা দেখতে কাবা শরীফের মতো। এ নিয়ে স্থানীয় ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের মধ্যে আপত্তি সৃষ্টি হয়।
গত শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে ‘ইমান আক্বিদা রক্ষা কমিটি’র ব্যানারে তৌহিদি জনতা বিক্ষোভ মিছিল বের করে। বিক্ষোভ শেষে তারা দরবারে হামলা চালায়, কবর ভেঙে মরদেহ উত্তোলন করে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ সময় নুরাল পাগলের ভক্তরা পাল্টা প্রতিরোধ করলে সংঘর্ষে শতাধিক মানুষ আহত ও রাসেল মোল্যা নামে এক ভক্ত নিহত হন। হামলাকারীরা পুলিশের গাড়িও ভাঙচুর করে এবং পুলিশকে লক্ষ্য করে হামলা চালায়।