৪ঠা আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | শুক্রবার

রাজবাড়ীতে সংবাদ সম্মেলন ও জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি–গোয়ালন্দে নুরাল পাগলের কবর স্বাভাবিক না করলে শুক্রবার বিক্ষোভের ঘোষণা

রাজবাড়ী ভয়েস ডট কম : রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে নিজেকে ইমাম মেহেদী দাবি করা নুরুল হক ওরফে নুরাল পাগলের মাটি থেকে প্রায় ১২ ফুট উঁচুতে কবর দেয়াকে কেন্দ্র করে তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছে। ইসলামী শরীয়তের পরিপন্থী দাবি করে তৌহিদী জনতা ফুঁসে উঠেছে।

বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজবাড়ী প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করে জেলা ইমান-আকিদা রক্ষা কমিটি জানায়, বৃহস্পতিবারের মধ্যে কবর স্বাভাবিক না করা হলে আগামী শুক্রবার জেলার পাঁচটি উপজেলার ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করা হবে। পরবর্তীতে ‘মার্চ ফর গোয়ালন্দ’ কর্মসূচিরও ঘোষণা দেওয়া হবে।

লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন রাজবাড়ী জেলা ইমাম কমিটির সভাপতি হাফেজ মাওলানা মোঃ ইলিয়াস আলী মোল্লা। তিনি বলেন, আশির দশকে ভণ্ড নুরাল পাগল নিজেকে ইমাম মেহেদী দাবি করে ধর্মীয় অনুশাসন বিকৃত করেছিলেন। আন্দোলনের মুখে ১৯৯৩ সালে এলাকা ছাড়লেও পরে আবার দরবার চালু করেন। মৃত্যুর আগেই তিনি কাবার আদলে ১২ ফুট উঁচু বেদি নির্মাণ করেন এবং গত ২৩ আগস্ট সেখানে তাকে দাফন করা হয়। ধারণা করা হচ্ছে, তাকে দক্ষিণমুখী মাথা দিয়ে দাফন করা হয়েছে, যা শরীয়তবিরোধী।

তিনি আরও বলেন, তৌহিদী জনতার আপত্তি সত্ত্বেও প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কবর নিচু করা হয়নি। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সময়সীমা দেওয়া হয়েছে। এরপর জুমার নামাজ শেষে জেলায় বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হবে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, নুরালের বড় ছেলে নূর তাজ খ্রিষ্টধর্ম প্রচার করছে এবং মুসলমানদের ধর্মান্তরিত করার চেষ্টা করছে। তাই নুরাল পাগলের কবর পুনরায় গোরস্থানে স্থানান্তরের দাবি জানানো হয়। অন্যথায় সেখানে ধর্মবিরোধী কার্যক্রম চলতে থাকবে এবং আস্তানা গুড়িয়ে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন রাজবাড়ী জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির অ্যাড. মোঃ নুরুল ইসলাম, ডা. আবুল হোসেন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ চৌধুরী আহসানুল করিম হিটু, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ রাজবাড়ী জেলা শাখার সেক্রেটারী আরিফুল ইসলাম, বিএনপি ওলামাদল রাজবাড়ী জেলা শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোঃ আনাস খান, খেলাফত মজলিসের জেলা সিনিয়র সহ-সভাপতি মোঃ ইউসুফ নোমানী, রাজবাড়ী বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সদস্য সচিব মোবাইদুর রহমান মিরাজ, চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক মোঃ নাসির মিয়া, এনসিপির সংগঠক আব্দুল্লাহ আল মামুন, খেলাফত যুব মজলিসের জেলা সভাপতি মুফতি আবু তাহের, ইমাম মাওলানা আঃ কুদ্দুস মিয়া প্রমুখ। পরে জেলা প্রশাসকের নিকট একটি স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।

উল্লেখ্য, গত ২৩ আগস্ট ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যুর পর রাতে গোয়ালন্দ দরবার শরীফ প্রাঙ্গণে নুরাল পাগলকে জানাজা শেষে ওই উঁচু বেদিতে দাফন করা হয়। শুরুতে কাবার আদলে রঙ করা হলেও আন্দোলনের মুখে পরে তা পরিবর্তন করা হয়। তবে এখনো কবর স্বাভাবিক করা হয়নি।

Scroll to Top